পরীক্ষায় পাস মার্ক ৩৩ হওয়ার কারণ কী? | Pass Marks | Exams | |
লেখা পড়া করার ক্ষেত্রে একজন মানুষ কোন বিষয়ে কতটা জ্ঞান অর্জন করতে পারলো তা নির্ধারিত হয় বার্ষিক পরীক্ষার মাধ্যমে।
আর সমাপণী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে কিনা তা নির্ধারিত হয় পাশ মার্ক দিয়ে. সেই পাশমার্ক হলো ১০০ নাম্বারের মানের পরীক্ষায় ৩৩
কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন?
কেন ৩৩ সংখ্যাকে পাশমার্ক হিসেবে ধরা হয় ক্লাস থেকে ইউনিভার্সিটির একাডেমিক পরীক্ষায় পাসের ক্ষেত্রে কিন্তু সবখানে একই নিয়ম. পাশ করতে হলে আপনাকে সর্বনিম্ন ৩৩ শতাংশ নাম্বার পেতেই হবে. যদিও এই নাম্বারটিকে মোটেও ভালো রেজাল্টের কাতারে ফেলা যায় না একেবারেই কোথাও বলতে গেলেও দ্বিধায় পড়তে হয় তা ছাড়া এই নাম্বারটি নেহায়াতী কোনোরকমে উত্তীর্ণ হিসেবেই ধরা হয়.
আবার এখন তো এর মান আরো কমিয়ে ২৮ করা হয়েছে. যদিও তার পেছনেও আছে শর্ত যেমন সেক্ষেত্রে শিক্ষক তার নিজস্ব ক্ষমতায় আরো পাঁচ মার্ক যোগ করে ২৮+৫. সমান ৩৩ মানে পাশ মার্ক ৩৩ হতে হবে. এর কম হলে তা কোনভাবেই পাশ mark হিসেবে গণ্য হবে না.
অবাক করা বিষয় হলো 33 নাম্বার পাশ মার্ক হিসেবে শুধু বাংলাদেশই নির্ধারিত নয় ভারত ও পাকিস্তানেও পাশ mark ৩৩ ধরা হয়. এখন কথা হলো এই ৩৩ মার্কের মান এতো কম হওয়া সত্ত্বেও ৩৩ কেন বা পাসমার্ক হিসেবে ধরা হয়?
চলুন আজ জেনে নিই এর পেছনের কারণ কি. ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বদলে সরাসরি ভারত শাসনের ব্রিটিশ রাজা. ব্রিটিশ রাজের অধীনে উপমহাদেশের প্রথমবারের মতো ম্যাট্রিক পরীক্ষা হয় ১৮৫৮ সালে. পরীক্ষার খাতা দেখতে গিয়ে অফিসিয়ালরা পাশ করার ক্রাইটেরিয়া কি হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারছিলেন না পাশের মার্ক নিয়ে ব্রিটিশ পরীক্ষার্থীদের সমান হবে নাকি ব্রিটিশদের চেয়ে কম সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে তারা ব্রিটিশ লর্ডদের পরামর্শ চান তখন ব্রিটেনের পাশ মার্ক ছিল ৬৫ অর্থাৎ ১০০ তে ৬৫ পেলে পরীক্ষায় কৃতকার্য বিবেচনা করা হতো যা আমাদের দেশের মোটামুটি ভালো রেজাল্টই বলা যায়.
তখন ব্রিটিশ লর্ডডার মনে করতেন উপমহা মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধির মাত্রা ব্রিটিশদের তুলনায় অনেক নিচে. বড়জোর ব্রিটিশদের অর্ধেক হতে পারে. আর সেই আর সেই ভাবনা থেকেই তারা পাশমার্ক নির্ধারণ করেন ৬৫ অর্ধেক ৩২.৫. তাই সেই ভাবনা থেকেই ম্যাট্রিক পরীক্ষার পাশমার্ক ৬৫ অর্ধেক ৩২.৫ সাব্যস্ত করা হয়.
আর এই নীতি চালু ছিল প্রায় চার বছর. পরে ১৮৬২ সালে গণনার সুবিধার জন্য (. ৫) যোগ করে ৩৩ করা হয় আর এভাবেই ৩৩ নাম্বারকে পাশ মার্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয় তবে ভাবার বিষয় হলো এই উপমহাদেশ ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে অনেক আগে. তবুও এত বছরেও ইংরেজদের শেখানো নিয়মেই চলছে এখানে শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার্থী মূল্যায়ণ যেখানে ব্যাপারটা পুরোপুরি স্পষ্ট যে ইংরেজরা এ জাতিকে ছোট করতে এমন মান নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করেছিল তবুও প্রায় ২০০ বছর পরও কেন এই নিয়ম আজও বিদ্যমান সেটা নিয়ে কেউ ভাবছে না। আর এটাই হলো উপমহাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশের উত্তরাধিকারের একটি নিদর্শন মাত্র।
We respect your freedom of speech.
Please don't write anything that might violate someone else's privacy.