Moon |
বন্ধুরা একবার কল্পনা করুন তো একদিন সন্ধ্যাবেলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আপনি দেখতে পেলেন যেখানে চাঁদ থাকার কথা এখানে সৌরজগতের অন্য কোনো একটা গ্রহ যেমন মঙ্গল বা শনি অথবা বৃহস্পতি এসে উপস্থিত হয়েছে ভেবে দেখুন তো যদি এমন হয় তাহলে গ্রহ হিসেবে আমাদের পৃথিবী কেমন আচরণ করবে আর আকাশের একটা পুরো অংশ ঢেকে দিয়ে যদি কোনো ভিন্ন গ্রহ আমাদের পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করা শুরু করে তাহলে সেটা দেখে আমাদের কেমন লাগবে?
মনে হবে আমরা নিজেরাই হয়তো অন্য কোন গ্রহে চলে এসেছি. তাই না. তবে শুধু অভূতপূর্ব দৃশ্যই নয় এই ধরনের ঘটনা যদি সত্যিই ঘটে তাহলে পৃথিবীর বিভিন্ন রকম ভালো এবং খারাপ পরিবর্তন আমরা চোখের সামনে দেখতে পাবো যেমন পৃথিবীর কক্ষ পথে পরিবর্তন সমুদ্রের ঢেউয়ের নাটকীয় উত্থান পতন? পৃথিবী স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রভৃতি. তবে যেহেতু বাস্তবে এখনো এইরকম কিছুই হয়নি. তাই এই ধরনের ঘটনার কোনো প্রমাণ বা সাক্ষীর প্রত্যক্ষ বর্ণনা আমাদের কাছে নেই. তাই আমরা এই পোস্ট এ বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে জেনে নেবো চাঁদের পরিবর্তে পৃথিবীর নতুন উপগ্রহ হিসেবে কোন গ্রহ পৃথিবী এবং তার জীবজগতের পক্ষে সব থেকে নিরাপদ আবার কোন গ্রহ সব থেকে ক্ষতিকারক
বন্ধুরা চাঁদের কাছে আমরা অনেক ভাবে ঋণী চাঁদ আছে বলে আমরা জীবনধারণের জন্য উপযুক্ত আবহাওয়া পাই. চাঁদ আছে বলে সমুদ্র স্রোত নির্দিষ্ট গতিপথে ঘোরাফেরা করে. পথের একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হলো উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় অণুবীক্ষণিক পরিপোষক পরিপোষক সমূহকে পরিবহণ করা. আমরা ছোটবেলায় শিখেছি যে পৃথিবীর অক্ষরেখা স্বাভাবিকের থেকে সারে ছেষট্টি degree কোনে হেলে আছে? এইভাবে হেলে থাকার পেছনেও চাঁদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ চাঁদ না থাকলে পৃথিবীর কোনো সুনির্দিষ্ট অক্ষ থাকবে না. যার ফলে পৃথিবীর আহ্নিক গতি নাটকীয় ভাবে ব্যাহত হবে. ফলে আমাদের পরিবেশ এবং জলবায়ুতে এমন সব ঘটনা ঘটতে শুরু করবে যে জীবজগতের অস্তিত্বের সংকট দেখা দেবে চাঁদকে কয়েকদিন ছুটি দিয়ে যদি তার জায়গায় অন্য কোনো গ্রহকে প্রতিস্থাপন করা হয় তাহলে কি হবে?
চলুন বন্ধুরা শুরু করা যাক প্লুটোকে দিয়ে. চাঁদের জায়গায় প্লুটো এসে উপস্থিত হলে আমরা খালি চোখে তেমন কোনো পার্থক্য দেখতে পাবো না. উলুটোর আয়তন চাঁদের থেকেও ছোট. তাই আকাশে তাকে চাঁদের থেকে ছোট দেখাবে. তবে পৃথিবীর পরিবেশের পক্ষে পুলুটো সেই অবস্থান খুব একটা সুখকর হবে না. চাঁদের থেকে আয়তনে ছোট হওয়ার ফলে প্লুটোর অভিকর্ষ বল চাঁদের থেকে দুর্বল হবে. ফলে সবার আগে জোয়ার ভাঁটার উপর প্রত্যক্ষ ভাবে প্রভাব পড়ে সমস্যাটা দেখা দেবে. সমুদ্রে আর আগের মতো ঢেউ তৈরি হবে না. যা আমাদের ইকোসিস্টেমকে আমূল পাল্টে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট.
আচ্ছা এবার প্লুটোর থেকে একটু বড় গ্রহের কথা ভাবা যাক. সেটা হল বোধ. বুধ আয়তনে আমাদের চাঁদের থেকে একটু বড়. এমনকি খালি চোখে ভূতকে অনেকটা চাঁদের মতোই দেখতে. কারণ চাঁদের মতো বুধের পৃষ্ঠেও কালচে ধূসর রং আছে. আর বুধের গায়েও চাঁদের মতো গর্ত আছে. তো বুধ আমাদের চাঁদের থেকে মাত্র দেড় গুণ বড়. তাই বুধের ক্ষেত্রে সমুদ্রের ঢেউয়ের সমস্যা তেমন প্রকটভাবে দেখা দেবে না. তাই ঝুঁকি তাই ঝুঁকি না নিয়ে বলা যায় পৃথিবীর উপগ্রহ হিসেবে চাঁদের বিকল্প খুঁজতে গেলে বোধ হলো সব থেকে নিরাপদ গ্রহ.
কিন্তু মঙ্গল গ্রহ নিয়ে এই কথা বলা যাবে না. যদিও এই লাল গুরুহকে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে দেখলে সেই দৃশ্য যে অতি মনোরম হবে সেটা নিয়ে অবশ্য কোনো সন্দেহ নেই মঙ্গলের পৃষ্ঠে আয়রন অক্সাইড থাকায় এই গ্রহকে লাল রঙের দেখাই তাই মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর উপগ্রহে পরিণত হলে আমাদের পৃথিবীতে চাঁদের সাদা আলোর জোৎস্নার রং ও লাল হয়ে যাবে. মঙ্গল গ্রহের আয়তন প্রায় পৃথিবীর মতই হিসেবে এর অভিকর্ষ টান চাঁদের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে. তাই সুনামি এলে যেমন সমুদ্রের ঢেউয়ের উচ্চতা বাড়ে, তেমনই সমুদ্রের সাধারণ ঢেউয়ের উচ্চতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে. শুধু তাই নয়, মঙ্গলের টানে সমুদ্রের ঢেউয়ের আকার, বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পৃথিবীর আন্দিকগতি মন্থর হয়ে গিয়ে দিনের দৈর্ঘ্য বেড়ে যাবে. আর বলা যায় না তখন হয়তো আপনাকে দিনে ষোলো ঘন্টা কাজ করতে হতে পারে.
এবার আসি শুক্র গ্রহের কথায় আমাদের সৌরজগতের সব থেকে উজ্জ্বল গ্রহ হলো শুক্র. তাই শুকনোকে পৃথিবীর উপগ্রহ হিসেবে পাওয়া গেলে পৃথিবীতে আর কখনো অন্ধকার হবে না. চব্বিশ ঘন্টাই দিনের আলোয় আলোকিত থাকবে. চাঁদের আলোর থেকে ষাট শতাংশ বেশি শক্তিশালী আলো বিকিরণ করার ক্ষমতা শুক্র গ্রহের আছে. এছাড়াও এই গ্রহ আমাদের চাঁদের থেকে সাড়ে তিনগুণ বড়. এর ফলে অভিকর্ষ বল এত বেশি হবে যে শুধু শুক্র গ্রহই পৃথিবীর দ্বারা প্রভাবিত হবে না. ও শুক্র দ্বারা প্রভাবিত হবে. তাই এই দুই গ্রহ একে অপরকে প্রদক্ষিণ করতে শুরু করবে. ব্যাপারটা খুবই চিত্তাকর্ষক. তাই না? কিন্তু আসলে এই অবস্থা মোটেই সুখকর হবে না. সাধারণত দুটি গ্রহ বা উপগ্রহ একে অপরকে টানতে শুরু করলে একটা সময়ের পরে একটা আরেকটার ঘাড়ে এসে পড়ে. শুক্র পৃথিবীর ঘাড়ে এসে পড়লে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা দেখা দেবে.
ইউরেনাস ও নেপচুন আসলে দুটি অধিক বড় পিণ্ড আর এই দুই গ্রহের আয়তনও প্রায় সমান. পৃথিবীর উপ পৃথিবীর উপগ্রহ হিসেবে এই দুই গ্রহকে পাওয়া গেলে আকাশের একটা বিরাট অংশ নীল সবুজ আলোয় ভরে যাবে. ইউরেনার্স আর নেপচুন আমাদের চাঁদের থেকে প্রায় চোদ্দো পনেরো গুণ বড়. তাই এদের টানে পৃথিবীতে সমুদ্রের ঢেউ এত উঁচুতে উঠবে যে জলে জলের ঝাপটা থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে পাহাড়ের উপর বাড়ি বানাতে হবে শনি যদি পৃথিবীর উপগ্রহে পরিণত হয় তাহলে সেটা হবে এক লোম খাঁড়া করা দৃশ্য. এই হালকা হলুদ রং আর মুকুটের মতো বলয়ের দৃশ্য থেকে চোখ ফেরানো যাবে না. কিন্তু সমস্যা হলো শনি গ্রহ আয়তনে পৃথিবীর থেকে এতটাই বড় যে এই দুই গ্রহ কাছাকাছি এলে খুব দ্রুত আমাদের পৃথিবীটাই শনির উপগ্রহে পরিণত হবে. আর সেটা হলে পৃথিবীর চেহারা আজকের মতো থাকবে না. সবশেষে আমাদের চাঁদের থেকে একচল্লিশ গুণ বড় সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির পালা. এই গ্রহের কাছে পৃথিবী এতটাই ছোটো যে কাছাকাছি এলে পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির উত্তর এবং দক্ষিণ মেরু আর দেখা যাবে না. শনির মতোই বৃহস্পতিও পৃথিবীকে খুব দ্রুত নিজের উপগ্রহে পরিণত করে ফেলবে.
We respect your freedom of speech.
Please don't write anything that might violate someone else's privacy.