১৫টি সহজ টিপস যা আপনার জীবনের টেনশন কমাবে! |
টেনশন মুক্ত জীবন পাওয়া প্রায়ই অসম্ভব!
আপনি কি মনে করেন আপনি অনেক টেনশনের মধ্যে আছেন? আপনি কি টেনশন মুক্ত হওয়া কঠিন মনে করেন?
আপনি যদি স্ট্রেস এবং টেনশন কমানোর উপায় খুঁজছেন, তাহলে আপনি ভাগ্যবান যে, আপনি টেনশন ফিল করে কমানোর উপায় খুঁজছেন।
এই নিবন্ধে, আমি এমন কতগুলো সহজ টিপস শেয়ার করব।
আপনি যদি আপনার জীবনে স্ট্রেস এবং টেনশন কমাতে চান, তাহলে নিম্নের সহজ উপায় গুলো জানুন!
১) ভ্রমন
অশান্ত মনকে শান্ত করার জন্য ঘোরাঘুরি করার কোনো বিকল্প নেই। আপনার মন যদি অস্থির থাকে তবে নতুন কোন জায়গায় ঘুরে আসুন।
হতে পারে সাগর পাড়ে হিমেল হাওয়া, বরফের প্রান্তর, ধু ধু বালির মাঠ, সবুজ অরন্য, নতুন কোন দেশ, নতুন কোন শহর - এগুলি সব আপনার মনকে শান্ত করবে এবং অস্থিরতা কমাবে।
তাই সুযোগ বুঝে বেরিয়ে পড়ুন পছন্দের কোনো জায়গায়।
২) নেতিবাচকতা
আশপাশে নানান ধরনের মানুষ নিয়েই আমাদের বসবাস। সবার মধ্যেই কম বেশি হিংসা, ভালোবাসা, প্রেম কিংবা রাগ-ক্ষোভ বিদ্যমান। তবে কিছু মানুষ রয়েছে প্রচন্ড নেতিবাচক ও হীন মানসিকতার, যাদের কাজই হচ্ছে আপনাকে ভয় লাগানো।
এরা আপনার জীবনকে বিষাক্ত করে তুলে। এদেরকে এড়িয়ে চলুন।
৩) পর্যাপ্ত ঘুম
সবার আগে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই একটা টাইম মেনে চলে। সেই টাইম না মানলে বিপদ যখন তখন ঘনিয়ে আসে।
প্রতিদিন সাত আট ঘণ্টা ঘুম আপনার শরীর সতেজ-ঝরঝরে রাখবে। টেনশন আসলেও আপনাকে তেমন কাবু করতে পারবেনা।
৪) ঋণ মুক্ত
ঋন মানুষের আত্ন মর্যাদা কমিয়ে ফেলে। যথা সময়ে ঋন পরিশোধ করতে না পারলে ঋন দাতা অপমান করতে ছাড়েনা। ঋন মনের অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলে।
তাই পারতে ঋন থেকে দূরে থাকুন, টেনশন মুক্ত থাকুন।
৫) দুর্বলতা শেয়ার
নিজের দুর্বলতা কাউকে বলবেন না। কেউ আপনার দুর্বলতা জেনে গেলে আঘাত করতে দ্বিধাবোধ করেনা।
বেশীরভাগ মানুষই আপনার দুর্বলতা সমাধান না করে বরং অহেতুক সূযোগ নিবে। যা করার আপনাকেই করতে হবে।
তাই অহেতুক নিজের অপারগতা বলে বেড়ানোর দরকার নেই।
৬) পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা
পর্যাপ্ত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা মস্তিষ্ক থেকে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে। এসব রাসায়নিক উপাদান মনকে প্রফুল্ল করে এবং শারীরিক-অমানসিক প্রশান্তি বাড়িয়ে তুলে।
ফলে বিষণ্নতা কিংবা হতাশা আপনাকে সহজে গ্রাস করবেনা।
৭) সৌন্দর্য চর্চা
কথায় আছে আগে দর্শনধারী পরে গুণবিচারী। মানুষের কাছে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য নিজের সৌন্দর্য খুব দরকার।
হ্যাঁ সৌন্দর্যের সংজ্ঞা নিয়ে মানুষের কাছে মতভেদ আছে।
কিন্তু একথা সত্য যে নিজেকে অপরের কাছে পরিপাটি করে উপস্থাপন করতে পারলে অনেক অর্জন সম্ভব যা অনেক টেনশন কমাতে সাহায্য করে।
৮) গান শোনা, বই পড়া, মুভি দেখা
একটা ভালো বই, ভালো গান এবং ভালো মুভি পারে আপনাদের চিন্তার জগতকে প্রসারিত করে ভিন্ন এক জগতে নিয়ে যেতে।
সাহিত্য কর্মের মধ্য দিয়ে আমাদের মনের সৃজনশীল চিন্তাধারার বিকাশ ঘটে।
ভাবনার নতুন পথ উন্মোচিত হয়। আপনার সামনে যখন নতুন এক দুনিয়া খুলে যাবে, তখন দুশ্চিন্তা স্থায়ী হওয়ার খুব বেশি সুযোগ পাবে না।
৯) বিবাদে না জড়ানো
ঝগড়া এমনই বিষয় যা কখনো কারো মঙ্গল বয়ে আনেনা। এটি শুধু ক্ষতি করে, মারামারি ও যুদ্ব বাঁধায়।
পারিবারিক ঝগড়া, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ঝগড়া শুধু টেনশন বাড়ায়, জীবন মালের ক্ষতি বাড়ায়।
আমাদের জীবনটা কিছু সময়ের জন্য, তাই এটা এত দামী যে, টেনশন থেকে আমাদের দুরে থাকা উচিত এবং জীবনকে উপভোগ করা উচিত ।
১০) আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী
অন্যের উপর মনোনিবেশ না করে নিজের উপর ফোকাস করুন। নিজেই নিজের কাজের প্রতিদ্বন্দ্বী হোন।
নিজের শক্তিবলে বলিয়ান হোন, সাহসী হোন এবং ধৈর্য ধরুন।
টেনশন আপনাকে ঘায়েল করতে পারবেনা।
১১) মেডিটেশন বা ধ্যান
অনেক সময় মানুষের অপ্রয়োজনীয় চিন্তাই টেনশন সৃষ্টি করে। ইদানিং প্রমানিত মে, মেডিটেশন টেনশন দূর করতে সাহায্য করে।
শান্ত এবং নিরিবিলি পরিবেশে এক মনে ধ্যান নিজেকে হালকা এবং ফুরফুরে করে। ফুরফুরে শরীরতো টেনশন মুক্ত শরীর।
মন যদি ভালো থাকে, টেনশন মোকাবেলা সহজ হয়।
১২) ছবি আঁকা
ছবি আঁকা দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপকে দূরে সরিয়ে রাখতে সাহায্য করে। আপনার ছবি আঁকা নিখুঁত হতে হবে এমন কোন কথা নেই।
আপনার মানসপটে যা আসে তাই আঁকুন। কেমন হলো সেটা নিয়ে ভাবার দরকার নেই। আপনিতো আর প্রতিযোগিতায় বসতেছেন না।
রঙ আর পেন্সিল দিয়ে আঁকিবুঁকি করে সময় কাটান, দেখবেন দুশ্চিন্তা দূরে সরে গেছে।
১৩) ডায়েরি লেখার অভ্যাস
মনে যা আছে তা ডাইরিতে লিখার অভ্যাস করুন। এই অভ্যাসটাই যে আপনাকে কতটা প্রশান্তি দেবে, তা কল্পনারও বাইরে।
কোনো কারণে খুব বেশি টেনশন ফিল করলে, কোনো বিষয় আপনাকে কষ্ট দিলে, প্রতিদিনের ছোট বড়, আনন্দ কষ্টের ঘটনাগুলো লিখে রাখুন।
এটা স্মৃতির মতো কাজ করে। পুরনো অনেক স্মৃতি মনের ভেতরের চাপ অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে।
১৪) বাগানে সময় দেওয়া
গবেষণা মতে, গার্ডেনিং মানুষের স্ট্রেস কমায়। ডিপ্রেশন ও মানসিক চাপ থেকে সে দুরে থাকতে পারে।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপকারের সাথে সাথে মনের অস্থিরতা ও কমায় এবং একই সাথে আপনার চারপাশ সবুজে ভরে যায়।
চারদিকের সবুজ পরিবেশ মনকে চাংগা করে এবং টেনশন কমাতে সাহায্য করে।
১৫) ধর্ম বিশ্বাস
ধর্ম নির্বিশেষে স্রষ্টার প্রতি প্রার্থনা আমাদের মনকে নরম করে, মনে এক অবারিত প্রশান্তি তৈরি হয়।
পৃথিবীতে যার কেউ নাই মনে করা হয়, তখন স্রষ্টাই তার কাছে একমাত্র ভরসা। সব কিছু মন খুলে বলতে পারার একটাই জায়গা।
ধর্মের প্রতি বিশ্বাসই আপনাকে অস্থিরতা থেকে বাঁচাতে পারে। এ এক মহা ঔষধ।
এখন তো জেনে নিলেন, মানসিক চাপ বা টেনশন দূর করতে বেশ কয়েকটি কার্যকর সমাধান! তাই না? এগুলোর মধ্য থেকে যেটি আপনি স্বাচন্ধ্যবোধ করেন সেটিই করুন।
একটা কথা মনে রাখবেন, খারাপ সময় সবার জীবনে থাকে। সেই খারাপ সময়কে সঙ্গে নিয়েই আমাদের হাসতে জানতে হয়, আনন্দ করতে হয়, জীবনের অজানা পথটুকু পাড়ি দিতে হয়।
তাই যে কোনো উপায়েই টেনশন কে জয় করে, নিজেকে ভালো রাখতে হবে, নিজেকে ভালোবাসতে হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, টেনশনকে মোকাবেলা করতে শিখুন।
আমরা যখন অন্যদের খুশি করার জন্য বেঁচে থাকি তখন স্ট্রেস, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা সৃষ্টি হয়।
-পাওলো কোয়েলহো
ভালো লাগলে শেয়ার করুন, অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
We respect your freedom of speech.
Please don't write anything that might violate someone else's privacy.