YouTube |
2008 সালে ইউটিউব প্লাটফর্মে মুক্তি পায় একটি ডাক সিনেমা. যার নাম কিতনা. আর যেটি মুক্তি পেতেই পুরো পাকিস্তানে ইউটিউব নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এটি ছিল মূলত একটি এনটি ইসলামিক সিনেমা. যেখানে ডিরেক্টলি এই ধরনের ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছে যে ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা গোটা বিশ্বকে শাসন করতে চায়. মহান আল্লাহ তায়ালা তখনই খুশি হন যখন একজন নন মুসলিম খুন হয়. বা তাকে হত্যা করা হয়.
এই ধরনের একটি বিতর্কিত সিনেমা এবং সরাসরি এনটি ইসলামিক সিনেমা মুক্তির পরে গোটা বিশ্বের মুসলিম সমাজের মধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়ে যায়. যেটা নিতান্তই ভাবেই কষ্টকর. কারণ এটা এমন একটি সিনেমা যেখানে ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ রাসুল মহম্মদ খুব খারাপ ভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে তাই স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে এই সিনেমার বিরুদ্ধে অবস্থান করতে দেখা যায় আর পাকিস্তান তাদের মধ্যে অন্যতম. শুধু এই ঘটনা নয়. পাকিস্তানে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবারই নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই ইউটিউব প্লাটফর্ম.
তবে তার মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে 2012 সালে. যেটা কিছুটা বিতর্কিতও বটে তো চলুন আজকের আর্টিকেলে সেটাই জানা যাক. 2012 সালে এমন কি ঘটেছিল যার জন্য চিরতরে পাকিস্তানে নিষিদ্ধ হতে হয় ইউটিউবকে. ইউটিউবে ইনোসেন্স অফ মুসলিম নামে একটি শর্ট ফিল্ম দুই version এ মুক্তি পায়. নামের মাঝে innocence থাকলেও এটা মোটেও কোনো innocent সিনেমা ছিল না. বরং এটা ছিল একটি এন্টি ইসলামিক সিনেমা।
এটা মুক্তির পরেই পুরো বিশ্বের তোলপাড় শুরু হয়ে যায়. মানুষ এই সিনেমাকে বয়কট করতে শুরু করে. ইউটিউব বা সেইসব স্পেসিফিক এরিয়াগুলোতে এই সিনেমা ব্লক করে দেয়. কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো এই সিনেমার অভিনেতা এবং অভিনেত্রীর এই ব্যাপারে কোনো ধারণাই ছিল না যে এটি একটি এন্টি ইসলামিক সিনেমা. প্রায় সকল অভিনেতা অভিনেত্রী এই সিনেমা মুক্তির পরে তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে এই ব্যাপারে নিশ্চিত করে যে সিনেমার পরিচালক সিনেমার চলাকালীন সিনেমার গল্পটাকে তাদের কাছে অন্যভাবে উপস্থাপন করেছিলেন. মূলত এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট ছিল মিশরের হাজার বছর আগের কাহিনী যেটার টাইটেল ছিল ডিজার্ভ ওয়ার ইউর. এবং যার ইস্ক্রিপ্টে আপাতদৃষ্টিতে কোনো ধরণের বিদ্বেষী ডায়লগ লেখা ছিল না. কিন্তু সিনেমার শুট হওয়ার পরে পোস্ট প্রোডাকশনে কিছু ডায়লগ পরিবর্তন করা হয়. এমন নাম যুক্ত কিছু ডায়লগ বসানো হয় যা সরাসরি ইসলাম বিদ্বেষী ভাব প্রকাশ করে. ফলাফল স্বরূপ পাকিস্তান এবং প্রতিটি মুসলিম দেশই সেটাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি. তাই পাকিস্তান এমনকি আফগানিস্তানে ইউটিউব প্লাটফর্মকে বন্ধ ঘোষণা করে এই শর্ত আরোপ করা হয় যতক্ষণ না অব্দি ইউটিউব থেকে এই ভিডিও সরানো হবে ততক্ষণ তাদের দেশে ইউটিউব বন্ধ থাকবে.
পরবর্তীতে হোয়াইট হাউস যখন ইউটিউব থেকে জবাবদিহিতা চায় তখন ইউ জানাই. ইউটিউব থেকে এই ভিডিও সরানো হবে না. তাদের যুক্তি ছিল এটি ইসলাম ধর্মের বিপক্ষে. কিন্তু এটা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের বিপক্ষে নয়. আর এর পরেই পাকিস্তানের যারা ইউটিউবকে সাময়িক সময়ের জন্য সাসপেন্ড করেছিল তারা পুরো ইউটিউবকে নিষিদ্ধ করে দেয় তাও এক হাজার দিনের জন্য. যা পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচাইতে বেশি সময়ের জন্য ব্যান করা হয়েছিল. এই সমস্যার সমাধানে জুলাই দুই হাজার তেরো সালে পাকিস্তানের আইটি মিনিস্টার আনসার রহমান একটি কমিটি গঠন করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল খুঁজে বের করা কিভাবে এই ধরনের কনটেন্ট ইউটিউব থেকে ব্লক করা কিন্তু এই ধরণের কোনো টুল খুঁজে না পেয়ে ডিসেম্বর দুহাজার-পনেরো সাল পর্যন্ত ইউটিউব পাকিস্তানে ব্যান্ড থাকে. পাকিস্তান শুধুমাত্র ধর্মীয় বিষয় নিয়ে নয়. আরো অনেক সময় অনেক সাধারণ ব্যাপারকেও ইউটিউব সহ অনেক সোশ্যাল মিডিয়াকেই ব্যান করে রেখেছিলো. যেমন 2022 সালের September এর ছয় তারিখে ইমরান খানের একটি রেলির বিশাল আয়োজ হচ্ছিল. স্বাভাবিকভাবেই সে তার অপজিট পার্টির বিরুদ্ধে কিছু কথা বলছিল. আর সেটা ইউটিউবে কেউ একজন প্রকাশ করার জন্য পাকিস্তান সরকার ইউটিউবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দেয়. এবং সেই সাথে সেই দেশের নিউজ চ্যানেলেও সেই রেলি কভার করার নিষিদ্ধ ছিল। আর তার কারণ একটাই পাকিস্তানের বর্তমান সরকার চায় না তার অপজিশনের কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলুক মূলত সেই ভিডিওতে ইমরান খান পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থার অবনতির জন্য ডিরেক্টলি পাকিস্তান আর্মিকেই দায়ী করছিলেন. ইমরান খান সরাসরি পাকিস্তান আর্মি কে শুধরে যাওয়ার কথা বলেন. যাতে করে পাকিস্তানের ইতিহাস তাদেরকে। ঘৃণা ভরে স্মরণ না করে এছাড়াও এর আগে বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইট সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যান করার নজির রয়েছে পাকিস্তানের যেমন 2005 সালের সেপ্টেম্বরে একটি ডেনিস নিউজ এজেন্সি রিটাজু একটি আর্টিকেলে বলে একটা কার্টুনের ম্যাগাজিনের profit মোহাম্মদ কার্টুন ড্র করার জন্য কোনো আর্টিস্ট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কারণটা খুবই পরিষ্কার. ইসলামিক গ্লাস ফ্লেমি লয়ের জন্য কেউ প্রফেট কার্টুন আঁকতে চায়নি কিন্তু পরবর্তীতে একটি পাবলিক ইভেন্টের মাধ্যমে মাত্র বারো জনের ড্র করা কার্টুন কালেক্ট করে সেটা পত্রিকায় ছাপানো হয় আর তার সাথে আরো একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়ে. সেটাই প্রফেট মোহাম্মদ সাথে তুলনা করা হয়েছিল। আর এই কারণে মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখানে একটা টুইস্ট আছে। এই ছবিটা একটা ছবি ছিল। যেটার সাথে কম্পিটিশনের কোনো সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু যতক্ষণ এই ব্যাপারটি সামনে আসে ততক্ষণে বৃক্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে. এসব দেখে ডেনমার্কের মানুষেরা অনেক বিরক্ত হয়ে গিয়েছিল. তাঁরা মনে করতে থাকে তাদের বাক স্বাধীন হরণ করা হচ্ছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় ডাস্ট রাজনীতিবিদ 2008 সালে ব্রেড হুইল্ডারস কিটনা নামে একটি শর্ট ফিল্ম প্রকাশ করে. যেটি ক্লিয়ারলি ইসলাম আর মুসলিমদেরকে টার্গেট করে বানানো ফিল্মটিতে সরাসরি ইসলামকে কটাক্ষ করা আর অশান্তির জন্য দায়ী করা হয়. এই কারণেই আবার পাকিস্তান সহ কিছু কিছু ইসলামিক রাষ্ট্রগুলোতে কে band করে দেওয়া হয়. যাতে করে বিক্ষোভের নতুন করে আর কোনো সূত্রপাত না ঘটে. কিন্তু পশ্চিমারা এমন কুকর্ম অনেকবার ঘটিয়েছে. যেমন দুই 2010 সালে আমেরিকান টিভি চ্যানেল, কমেডি সেন্ট্রাল, সাউথ পার্ক নামক একটি কার্টুনে অন্যান্য ধর্মের গডসদের পাশাপাশি মহম্মদ ক্যারেক্টারও দেখানো হয় যদিও ধর্মপ্রাণ মুসলিমের জন্য মেনে নেওয়া অনেক কঠিন ছিল কিন্তু দুইশো আর দুইশো একতম এপিসোডে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয় তখন আ বিক্ষোভ শুরু হয়. কার্টুন নির্মাতাদেরকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়. পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে পুরো এপিসোডই ক্যানসেল কমিটি সেন্ট্রাল কিন্তু এখান থেকে ঘটনা আবারও ইউটার্ন নেয় সাপোর্টার কার্টুনিস্ট মলিনারিস্ট ক্যান্সেল করা সেই এপিসোডের সাপোর্টে ক্যাম্পেইন করে. আর মে মাসের বিশ তারিখে এভরিবডি ড্রো মহম্মদ দিয়ে ডিক্লেয়ার করে. এটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে গেলে অনেকেই কার্টুন ড্র করে পোস্ট করতে এবং আবার মুসলিমরা বিক্ষোভ শুরু করে তখন পাকিস্তানসহ কিছু দেশে ইউটিউব, ফেসবুক, ফিকার ব্যান করে দেওয়া হয়. আর এভাবেই পাকিস্তানে ইউটিউব শুরু থেকে এ পর্যন্ত অজস্র বার ব্যান করা হয়েছে।
We respect your freedom of speech.
Please don't write anything that might violate someone else's privacy.